ঈশ্বরতত্ত্ব : (১) – একজন নিধার্মিকের পয়েন্ট অব ভিউ

Non-Religious' View
মানব ইতিহাসের প্রথম আধ্যাত্মিক এবং যৌক্তিক প্রশ্ন সম্ভবত “আমাদের অস্তিত্ব কেনো আছে?” এই প্রশ্ন থেকে আজকের দর্শন, বিজ্ঞান এ সকল কিছুর উদ্ভব। জিনগত ভাবে মানুষ কৌতূহলী প্রাণী। আমরা সবাই জানি আমাদের প্রাথমিক জীবন এত সহজ ও সাবলীল ছিলো না। অন্যান্য হিংস্র প্রাণীর সাথে টক্কর দিয়ে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যেতে হয়েছে হোমো-সেপিয়েন্সকে। খাদ্যের জন্য শিকার করতে হয়েছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগের সাথে যুদ্ধ করতে হয়েছে নিরাপদ আবাসস্থলের জন্য। এত কিছুর পরও মানুষ প্রশ্ন করেছে। “আমরা কেনো আছি?”, “এই গাছ-পালা, নদ-নদী, পৃথিবী কেনো আছে?”। সেই সময় মানুষ জানত না বর্জ্রপাত কেনো হয়, প্রাকৃতিক দূর্যোগ কেনো হয়, মানুষ জন্ম কেনো নেয়, মৃত্যু কেনো হয়। শিকরের প্রশ্ন, আমাদের অস্তিত্ব কেনো আছে? খুব সরল ও স্বাভাবিক বিচারে আমরা দালান তৈরি করি বলে সেই দালানের অস্তিত্ব আছে, আমরা গাছ রোপণ করি বলেই সেই গাছের অস্তিত্ব আছে। এসকল চিন্তা ভাবনা থেকে প্রথম চিন্তাবিদগণ ধারণা দেন কেউ একজন আমাদের তৈরি করেছে। তখন মানুষ জ্ঞানের একদম প্রাথমিক পর্যায়ে ছিলো। পাশবিক, বর্বর (যারা মাত্র সভ্য হতে শিখতে শুরু করেছিলো। গড়ে তুলেছিলো সভ্যতা। অনেক সময় তা বর্বর সভ্যতা) ও প্রকৃতির নানা কার্যকলাপে বিস্মিত মানুষদের কাছে এটা এক যুগান্তকারী ধারণা ছিলো। যার পেছনে খুব স্বাভাবিক যুক্তি কাজ করত। আর তা হলো, আমাদের কেউ তৈরি না করতে আমরা কোথায় থেকে এলাম?
কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো কে আমাদের তৈরি করলো? এবং কেনোই বা তৈরি করলো? চিন্তাবিদগণ কখনো অলস সময় কাটান নি। মানুষ ও তার ক্ষমতা ধীরে ধীরে উপলব্ধি করতে শুরু করেছিলো। আর এটুকুও তারা বুঝতে শিখেছিল যে, আমাদের ক্ষমতা যদি এমন হয় তাহলে আমাদের যে তৈরি করেছে তার ক্ষমতা কতটা হতে পারে। কে আমাদের তৈরি করেছে এই প্রশ্নের উত্তর মানুষ কখনোই খুঁজে পায় নি। তবে কেউ একজন যে তৈরি করেছিলো এটা তারা মেনে নিয়েছিলো। এভাবেই প্রথম তৈরি হলো ঈশ্বরের ধারণা। অজানা, অদেখা, অচেনা কোন এক শক্তি হয়ে উঠলো এই গ্রহের সবচেয়ে উন্নত মস্তিষ্ক ওয়ালা প্রাণীর জীবন যাত্রার কেন্দ্রবিন্দু।
দ্বিতীয় প্রশ্নটি, অর্থাৎ, ঈশ্বর কেনো আমাদের তৈরি করলো, এই প্রশ্নটিই সমাজ এর আমূল বদলে দিলো। মানুষ আসলে এই প্রশ্নটিরও কোন উত্তর খুঁজে পায় নি। তবে ততদিনে মানুষ ভক্তি, শ্রদ্ধা এই জিনিসগুলোর সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠেছিলো। তারা এটা মানত যে, যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন, এই অমূল্য জীবন দান করেছেন তার প্রতি ভক্তি, শ্রদ্ধা ইত্যাদি প্রদর্শন করা প্রয়োজন। এই জিনিসটা খুব একটা খারাপ ছিলো না। এই কেউ (ঈশ্বর) কে ঘিরে মানব সমাজে উদ্ভব হতে থাকলো নানা আচার অনুষ্ঠান, উৎসব। যা শিকারি এবং কৃষিকাজ করা মানুষদের জীবনে নিয়ে আসলো এক নতুন আমেজ। জীবন হঠাত করেই অন্যরকম হতে শুরু করেছিলো।
চিন্তাবিদগণ থেমে ছিলেন না। ঈশ্বরের ধারণা নিয়েই শুধু তারা পরে থাকেন নি। তাদের চিন্তাধারা ততদিনে কয়েকভাবে বিভক্ত হয়ে গেছে। কেউ চিন্তা করত ঈশ্বরকে নিয়ে, কেউ প্রকৃতি, কেউ মানুষের জীবন যাত্রা নিয়ে। প্রকৃতি নিয়ে চিন্তা করা মানুষগুলো তখন ঈশ্বর আর প্রকৃতির মধ্যে কিছু একটা মিল খুঁজে পেলেন। তারা প্রকৃতির মাঝেই খুঁজে পেলেন ঈশ্বরকে। যেহেতু তখনকার মানুষ প্রাকৃতিক দূর্যোগ, বর্জ্রপাত, বৃষ্টি এগুলোর কারণ জানত না, তাই মানুষ এগুলো ঘটনার জন্য দায়ী করে দিলেন ঈশ্বরকে। ঈশ্বর কেনো এগুলো করেন তারও একটি করে কারণ পেশ করলেন তারা। মানুষ ধীরে ধীরে ঈশ্বরের ভক্তি ও শ্রদ্ধা করার যথেষ্ট কারণ ও প্রয়োজনীয়তা বোধ করতে লাগলো। যেমন ঈশ্বর রেগে গেছেন বলে বর্জ্রপাত হচ্ছে, দাবানল হচ্ছে, আবার ঈশ্বর খুশি বলে রংধনু উঠছে। প্রকৃতির এই সকল খামখেয়ালীপনা ব্যাখ্যা করতে মানুষ ঈশ্বরের ব্যবহার শুরু করে। তারপর প্রকৃতির মাঝেই দেখা মেলে ঈশ্বরের। সূর্য্য ঈশ্বর, বৃক্ষ ঈশ্বর, সমুদ্র ঈশ্বর ইত্যাদি ইত্যাদি নানা ঈশ্বরের দেখা মিলতে শুরু করে একে একে। প্রথম শুরু হয় সাম্প্রদায়িকতা। যে যাকে ঈশ্বর হিসেবে বেছে নেয় সে সবদিক থেকে (আচার-অনুষ্ঠান, জীবন যাপন, চিন্তাধারা) আলাদা হয়ে পরে অন্য ঈশ্বরকে বেছে নেওয়া মানুষদের থেকে। শুরু করে ভিন্নভাবে বসবাস করতে। নানান ঈশ্বরের পূজারীদের আচার-অনুষ্ঠান ও জীবন যাত্রার ভিন্নতা পৃথিবীতে তৈরি করে বিচিত্রতা। সুন্দর হতে থাকে পৃথিবী। এদিকে চিন্তাবিদগণ তখন ঈশ্বর কেনো আমাদের তৈরি করেছেন তার কারণ ও খুঁজে পেতে শুরু করেছে। তিনি চান আমরা সবাই ভালো কাজ করি এবং তার সেবা, ভক্তি, পূজা ইত্যাদি করি। তখনকার প্রায় অসভ্য ও বর্বর মানুষের ওপর এই জিনিসটি চমৎকার কাজ করলো। সৃষ্টি হলো নৌতিকতার ধারণা এবং তা জুড়ে গেলো ঈশ্বরের ধারণার সাথে বা ধর্মের সাথে। এখনো অনেকেই মনে করেন ধর্ম ছাড়া নৈতিকতা অসম্ভব।
মানুষ যখন প্রকৃতির সব কিছু ব্যাখ্যা করার জন্য ঈশ্বরকে ব্যবহার শুরু করলো তখন প্রকৃতি নিয়ে মানুষের প্রশ্ন কমতে থাকলো। কারণ ঈশ্বরই সকল প্রশ্নের উত্তর। কিন্তু এবার সত্যি বিপদে পরে গেছে বেচারা ঈশ্বর। কারণ মানুষ এবার প্রশ্ন করতে শুরু করলো স্বয়ং ঈশ্বরকে নিয়ে। চিন্তাবিদগণ ধীরে ধীরে ঈশ্বরের ধারণার নানা খুঁত খুঁজে পেলো। যারা চিন্তা করত তাদের কাছে ঈশ্বরের ধারণা ক্রমস ফ্যাঁকাসে হয়ে এসেছিলো। কিন্তু ততদিনে ঈশ্বর অনেক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে গেছেন। মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের পরতে পরতে ঈশ্বর তার আধিপত্য বিস্তার করে নিয়েছেন।
ঈশ্বরের ধারণাকে ধর্মতে রূপ নিতে সময় লেগেছে অনেক, কাঠ-খড়ও পোড়াতে হয়েছে। তৈরি হয়েছে অনেক নীতি, অনেক সংস্কৃতি আর অনেক ঈশ্বর। মানুষ আলাদা হয়ে পরেছে তাদের ধারণার দিক থেকে, ধর্মের দিক থেকে। এখন তাদের মাঝে আরও আছে ঈশ্বরে অবিশ্বাসী মানুষদের একটি দল, সন্দেহবাদীদের একটি দল এবং নিধার্মিক। আবার ফিরে যেতে হচ্ছে তখন, যখন মানুষ ঈশ্বরকে নিয়ে প্রশ্ন করতে শুরু করেছে।
ঈশ্বরের ধারণা তৈরি হবার একদম প্রাথমিক প্রশ্নই এবার ঈশ্বরের ধারণার ভিত নাড়িয়ে দিলো। প্রথম ক্ষেত্রে প্রশ্নটি ছিলো আমরা কেনো আছি? কোথায় থেকেই বা এলাম? আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে প্রশ্নটি হলো ঈশ্বর কেনো আছে? ঈশ্বর কোথায় থেকে এলো? আগের মত এবারেও সবচেয়ে সহজ যুক্তি হলো ঈশ্বরকে কেউ সৃষ্টি করেছে। ধরে নিলাম, “অতি-ঈশ্বর” “ঈশ্বর” কে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু এই “অতি-ঈশ্বর” কেও তো কারও না কারও তৈরি করতে হয়েছে। আবার ধরে নিলাম, “অতি-অতি-ঈশ্বর” “অতি-ঈশ্বর” কে সৃষ্টি করেছেন। এভাবে চলতেই থাকবে, যা অসম্ভব। কখনো বা কখনো, কোনও না কোনও কিছু শূন্য থেকেই তৈরি হয়েছিলো। এক্ষেত্রে ঈশ্বরে অবিশ্বাসীরা বলেন,” এই মহাবিশ্ব (এককথায় সকল কিছু) শূন্য থেকে তৈরি হয়েছে। এখানে কোনও ঈশ্বরের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন পরে নি।” কিন্তু এই মহাবিশ্ব যদি একেবারে শূন্য থেকে তৈরি হতে পারে, একজন ঈশ্বর কেনো শূন্য থেকে তৈরি হতে পারে না? বরং এই পুরো মহাবিশ্ব শূন্য থেকে তৈরি হবার থেকে একজন ঈশ্বর শূন্য থেকে হওয়া অনেকও সহজ।
তাই এখানে একটা কনফিউশন থেকে গেলো যে, আসলেই ঈশ্বর আছে নাকি নেই? কিন্তু তাতে কি আসে যায়। যদি ঈশ্বর থেকে থাকে এবং পরকাল বা বিচার থেকে থাকে, আর আমি যদি কোনও খারাপ কাজ না করে থাকি, তাহলে আমার ভয় কি? আর যদি ঈশ্বর না থাকে, তাহলে তো হয়েই গেলো। এটাই মূলত একজন নিধার্মিকের পয়েন্ট অব ভিউ। কিন্তু এটাই শেষ কথা নয়।  
চলবে…

স্পেশাল হেড ও লেভিটেশন

মনস্তাত্বিক সবকিছুই আমার ভালো লাগে। সম্পর্কিত মনোবিজ্ঞান ও। যদিও আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বিষয়গুলোর মধ্যে সাইকোলজি পরে না, তবুও একটা সময় আমার কেটেছে শুধু সাইকোলজি ভিত্তিক বই পড়ে পড়ে। কিছু কিছু সাইকোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার আমাকে একদম মুগ্ধ করে রেখেছিলো। অবাক হয়ে ভাবতাম, ‘এও সম্ভব’। একদিন জানতে পারলাম প্যারাসাইকোলজির কথা। তখন থেকে চিন্তা ভাবনা একেবারে চেঞ্জ হয়ে গেল। আসলে প্যারাসাইকোলজির গভীর থেকেই হয়ত আমার যাত্রা শুরু হয়েছিলো। তারপর ধীরে ধীরে বাইরের দর্শন।
যাই হোক, কাজের কথায় আসি। কয়েকদিন আগে আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে স্পেশাল হেড নামক এক ব্যাক্তির কথা জানতে পারি। যে কিনা মনস্তাত্বিক শক্তি ব্যবহার করে শুণ্যে ভেসে থাকতে পারে। যাকে প্যারাসাইকোলজির ভাষায় বলে লেভিটেশন। বিজ্ঞানের ভাষায় যদি বলেন, তবে লেভিটেশন শুধু লেভিটেশন থাকে না, তার আগে একটা বাড়তি শব্দ যুক্ত হয়ে যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ‘ম্যাগনেটিক লেভিটেশন’। আমি যখন প্রথম স্পেশাল হেড এর লেভিটেশন এর ভিডিও দেখি, সত্যি বলতে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কেন তা একটু পরেই বুঝতে পারবেন।
স্পেশাল হেড শুধু আলোচিত ব্যক্তিই নন, সমালোচিতও বটে। তার লেভিটেশন কি সত্যিকারের সেই প্যারাসাইকোলজি বা স্পিরিচুয়াল লেভিটেশন, নাকি এটাও কোনো একধরনের ট্রিক বা ইলুশন, সেটা নিয়ে আছে অনেক  তর্ক-বিতর্ক, আছে অনেক প্রশ্ন। তার আগে লেভিটেশন সম্পর্কে একটু জেনে আসি।



১. লেভিটেশন (Levitation):
প্যারাসাইকোলজির চোখ দিয়ে দেখলে লেভিটেশন বা ট্রান্সভেকশক, সাইকোকাইনেসিস বা টেলিকাইনেসিস এর সাথে ব্যাপকভাবে সম্পর্কিত। সাইকোকাইনেসিস বলতে আসলে বোঝায়, অতিইন্দ্রিয় শক্তি ব্যবহার করে কোনো অবজেক্ট বা বস্তুকে সরানো, স্থানচ্যুত করা বা ম্যানুপুলেট করা। এই অবজেক্টটি মানুষও হতে পারে। লেভিটেশন শব্দটার সাথে আমরা অনেক বেশি পরিচিত। এই লেভিটেশন জিনিসটিও বলতে পারেন একধরনের সাইকোকাইনেসিস, যেখানে অবজেক্ট আপনি নিজে। কিন্তু এখানে সমস্যা হলো, প্যারাসাইকোলজি নিজেই বলে যে লেভিটেশনের কোনো বাস্তব বা চাক্ষুস প্রমাণ নেই।
১.১ লেভিটেশনের প্রকারভেদ (Types of Levitation):
লেভিটেশন বলতে আমরা শুধু অতিইন্দ্রিয় বা মনস্তাত্বিক কোনো ক্ষমতার কথাই ভেবে থাকি। চলুন পরিচিত হয়ে আসি আরো কিছু লেভিটেশনের সাথে।
·         সাইকিক লেভিটেশন- প্রথমেই আসছে সাইকিক লেভিটেশনআমার লেখার মূল বিষয়। সেই অতিইন্দ্রিয়J
·         ম্যাগনেটিক লেভিটেশন- অনেকেই ম্যাগনেটিক লেভিটেশন সম্পর্কে শুনেছেন। বিশেষ করে জাপানের ম্যাগট্রেন এর রেকর্ড এর পর থেকে, এই ট্রেন ম্যাগনেটিক লেভিটেশন এর মাধ্যমে চলে। ম্যাগনেটিক লেভিটেশন চৌম্বক এর বিকর্ষণ ধর্ম ব্যবহার করে কাজ করে। ৬০৩ কিমি বেগের বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে ম্যাগট্রেন নামক এই ট্রেন। বিস্তারিত
·         ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক লেভিটেশন- ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক লেভিটেশনে ইলেক্ট্রোনিক ফিল্ড ব্যবহার করা হয় গ্রাভিটেশনাল ফোর্সকে কাউন্টারএক্ট করার জন্য।
·         এরোডাইনামিক লেভিটেশন- এরোডাইনামিক লেভিটেশন কাজ করে কোনো গ্যাস এর স্ট্রিম ব্যাবহার করে। যেমন, ভ্যাকিউম ক্লিনারকে ব্লো মুড এ করে রেখে কোনো পিং পং বলকে লেভিটেট করা যায়। যদি যথেষ্ঠ সোর্স থাকে, তাহলে যে কোনো বড় অবজেক্টকে এই প্রক্রিয়ায় লেভিটেট করা সম্ভব।
·         একোস্টিক লেভিটেশন- একোস্টিক লেভিটেশনে যা ব্যবহার করা হয় তা হলো সাউন্ড ওয়েভ বা শব্দ তরঙ্গ। যার মাধ্যমে লেভিটেশন করার মত ফোর্স বা শক্তি উৎপন্ন করা হয়।
·         অপটিক্যাল লেভিটেশন- অপটিক্যাল লেভিটেশন অনেকটা নয় পুরোটাই আমাদের দেখা সায়েন্স ফিকশন মুভির দৃশ্যের মত। ব্যাখ্যা করি, আমরা অনেক সায়েন্স ফিকশন মুভিতে দেখে থাকবো যে কোনো একটি অবজেক্ট কোনো একটি বেস এর উপর ঘুরছে বা শুণ্যে ঝুলে আছে। এই প্রক্রিয়া হলো অপটিক্যাল লেভিটেশন। অপটিক্যাল লেভিটেশনে কোনো একটি উপরিমুখি বল দ্বারা মহাকর্ষ বলকে পরাজিত করা হয়। আর এই কোনো একটি উপরিমুখি বল হলো, ‘ফোটন মোমেনটাম ট্রান্সফার’। (এখানে ফোটন এর রেডিয়েশন প্রেসারকে ব্যবহার করা হয়।)
·         বোয়েন্ট লেভিটেশন- যখন কোনো গ্যাস এর প্রেসার এর কারণে এর ঘনত্ব বেড়ে যায় (কোনো কঠিন বস্তুর থেকে বেড়ে যায়), তখন ঐ কঠিন বস্তুকে ঐ গ্যাসের প্রেসার দ্বারা লেভিটেট করা সম্ভব। এটা হয়ে থাকে বোয়েন্সি এর কারণে। এজন্য নিষ্ক্রিয় গ্যাস ব্যবহার করা হয়, যেন তার কোনো অবজেক্ট এর সাথে রাসায়নিক ক্রিয়া না করতে পারে। যেমন, জেনন। জেনন ১৫৪ এটিএম প্রেসারে পলিইথিলিন লেভিটেট করতে ব্যবহার করা হয়।
           
·         কাজিমির ফোর্স- সম্প্রতি বিজ্ঞান এই কাজিমির ফোর্স আবিষ্কার করেছে। এটি কোয়ান্টাম মেথড মেনে চলে এবং শুধুমাত্র অতি ক্ষুদ্র কণা লেভিটেট করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
১.২ সাইকিক লেভিটেশন:
এবার আসি সাইকিক লেভিটেশনে। এখানে লেভিটেশন বা ট্রান্সভেকশন বলতে কোনো রহস্যময় প্রক্রিয়ায় মানব দেহ বা অন্য যে কোনো অবজেক্ট শুণ্যে ভেসে থাকা বোঝায়। প্যারাসাইকোলজির কিছু পাগলাটে ধরনের ভক্ত এবং ধর্মবিশ্বাসীরা মনে করে থাকে যে এই লেভিটেশন হচ্ছে মনস্তাত্বিক বা স্পিরিচুয়াল কোনো এক অতিপ্রাকৃতিক শক্তির ফল। বিজ্ঞানীমহল বা সায়েন্টিফিক কমুনিটির সদস্যগণ বলেন, এখানে লেভিটেশনের কোনো চাক্ষুস প্রমাণ নেই, অথবা একে বৈজ্ঞানিক থিওরি দ্বারা ব্যাখ্যাও করা যায় না। সাইকিক লেভিটেশন শুধুমাত্র কোনো যাদুর ট্রিক, ইলুশন অথবা হ্যালুজিনেশন।

২.০ ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ:
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে লেভিটেশনের কিছু চমকপ্রদ ঘটনা পাওয়া যায়। সাইকিক লেভিটেশন সম্পর্কে জানতে হলে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা অতি গুরুত্বপূর্ণ।
·         বৌদ্ধ ধর্ম- কথিত আছে গৌতম বৌদ্ধ একবার এক ব্রাক্ষ্মনকে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণের দীক্ষা দেয়ার জন্য পানির উপর দিয়ে হেটে (পা পানিতে না ছুইয়ে শুন্যে ভাসমান অবস্থায়, যাকে আমরা লেভিটেশন বলতে পারি) গিয়েছিলো। আরেক বৌদ্ধ গুরু মিলারেপার নাকি এমন মনস্তাত্বিক ক্ষমতা ছিলো যে তিনি লেভিটেশন করা অবস্থায় হাটতে, বিশ্রাম করতে এবং ঘুমাতে পারতেন। এছাড়া বৌদ্ধ পুরাণ আরো বলে, "Sitting crosslegged he flies through the air like a winged bird."
       Milarepa
·         খৃষ্টান ধর্ম- মথি ১৪:২২-২৩ এ বলা আছে যে যীশু খৃস্ট একবার তার শিষ্যদের সাথে সাক্ষাত করতে পানির উপর দিয়ে হেটে গিয়েছিলেন, যারা কিনা নৌকার উপর বসে ছিলো।
St. Bessarion the Great, wonderworker of Egypt (466) এ বলা আছে যে তিনি একবার পানির উপর হেটে নদী পার হয়েছিলেন। 
সেইন্ট তেরেসা (এভিলায় জন্ম) তিনি নাকি ভূমি থেকে ফুটখানেক উপরে উঠে ভেসে থাকতে পারতেন এবং প্রায় আধা ঘন্টা যাবত পারতেন। 
খৃষ্টান ধর্মে যত গুলো লেভিটেশনের ঘটনা খুঁজে পাওয়া যায়, সেটা এখানে লিখতে গেলে আপনাদের যা বিরক্ত করছি তার মাত্রা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। তাই আগ্রহীদের জন্য ঠিকানা বলে দিলাম, ঢু মেরে আসবেন।
"Demonic" levitation in Christianity
·         সনাতন ধর্ম- সনাতন ধর্মেও খৃষ্টান ধর্মের মত লেভিটেশনের ঘটনা আছে শত শত। সনাতন ধর্মালম্বীরা বিশ্বাস করে সনাতন গুরুরা দীর্ঘদিন সাধনার পর সিদ্ধি লাভ করে। তাদের বলে সিদ্ধ পুরুষ এবং তারা লেভিটেশন করার ক্ষমতা লাভ করে। সংস্কৃততে এই ক্ষমতাকে বলে লাঘুমান অথবা দারদউরা সিদ্ধি। ইয়োগানন্দর লেখা ‘অটোবায়োগ্রাফি অব এ ইয়োগি’ বইয়ে কিছু সিদ্ধ পুরুষের কথা বলা আছে, যারা সিদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে লেভিটেশনের ক্ষমতা অর্জন করেছেন।
                        Autobiography of a Yogi
Subbayah Pullavar নামের একজন সনাতনী যোগী পুরুষ ৬ জুন ১৯৩৬ সালে ১৫০ জন মানুষের সামনে প্রায় চার মিনিট পর্যন্ত শুন্যে ভেসে ছিলেন। এই সময় সে শুধু তার হাত দিয়ে একটা কাপড়াবৃত লাঠি আলতো ভাবে ধরে ছিলো।
                        Yogi Pullavar
এছাড়া সিদ্ধি সাই বাবা নামক আরেকজনের খোজ পাওয়া যায় যে ঘুমের সময় লেভিটেশনের একটা বর্ণনা ও সম্ভবত দাবী পেশ করেন। এছাড়াও মহাঋষী মহেষ নামক এক যোগীর Transcendental Meditation movement নামে একটা অর্গানাইজেশন আছে, যেখানে নানা মেডিটেশনাল প্রোগ্রাম হয়ে থাকে। যোগী উড়ণ বা (Yogic Flying) নামে  একটি প্রোগ্রাম  হয় সেখানে। তবে লেভিটেশন বা শূণ্যে ভেসে থাকার কোনো রেকর্ড সেখানে আছে কিনা জানা নেই।
·         জুডাইজম- এখানে বালাম নামে এক প্রোফেট কথা জানা যায় যার লেভিটেশন করার ক্ষমতা ছিলো। এছাড়া আদি ইজরাইল এর রাজা সোলায়মান (ইসলামের নবী), তার নাকি হাওয়ায় ভর করে ভেসে বা উড়ে যাওয়ার ক্ষমতা ছিলো। ইসলাম ধর্মেও অনেকটা এরকম বর্ণনা পাওয়া যায়।
·         ইসলাম ধর্ম- ইসলামে লেভিটেশন এর তেমন কোনো বর্ণনা বা ব্যাখ্যা কিছুই পাওয়া যায় না। তবে নবী সোলায়মান যে হাওয়ায় ভেসে ভেসে খুব দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারতেন তা বলা হয় কোরআনের ৩৪ নং সূরা ‘সাবা’ এর ১২ নং আয়াতে।


وَلِسُلَيْمَانَ الرِّيحَ غُدُوُّهَا شَهْرٌ وَرَوَاحُهَا شَهْرٌ وَأَسَلْنَا لَهُ عَيْنَ الْقِطْرِ وَمِنَ الْجِنِّ مَن يَعْمَلُ بَيْنَ يَدَيْهِ بِإِذْنِ رَبِّهِ وَمَن يَزِغْ مِنْهُمْ عَنْ أَمْرِنَا نُذِقْهُ مِنْ عَذَابِ السَّعِيرِ    


আর আমি সোলায়মানের অধীন করেছিলাম বায়ুকে, যা সকালে এক মাসের পথ এবং বিকালে এক মাসের পথ অতিক্রম করত। আমি তার জন্যে গলিত তামার এক ঝরণা প্রবাহিত করেছিলাম। কতক জিন তার সামনে কাজ করত তার পালনকর্তার আদেশে। তাদের যে কেউ আমার আদেশ অমান্য করবে, আমি জ্বলন্ত অগ্নির-শাস্তি আস্বাদন করাব।
৩.০ ইতিহাস:
ইতিহাস ঠিকঠাক ভাবে ঘাটলে এমন অনেক মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা লেভিটেশন এর দাবীদার বা জনসম্মুখে লেভিটেশন করেছেন। প্রথমেই বলি কলিন এভান (Colin Evans) এর কথা। যিনি একজন আধ্যাত্মবাদী। এবং তিনি ১৯৩৭ সালে লন্ডন এর একটি পাবলিক পার্কে জনসম্মুখে লেভিটেশন করেন। এবং তার কিছুদিন পরেই তার লেভিটেশনের এর সিক্রেট উন্মোচন হয় এবং সে ফ্রড হিসেবে চিহ্নিত হয়। কলিন এভান এর লেভিটেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখান থেকে ঘুরে আসুন।
levitation secret revealed 70 years ago



ড্যনিয়েল ডুঙ্গলাস নামের আরেক আলোচিত লেভিটেটর এর খোজ পাওয়া যায় ইতিহাসে। Les Mystères de la science (বিজ্ঞান রহস্য) নামের একটি ফরাসি ম্যাগাজিন ড্যানিয়েল এর এই লেভিটেশনকে একটি লিথোগ্রাফ হিসেবে ব্যাখ্যা করে। আরো তথ্য:
daniel dunglas home



ইতিহাসে যারাই লেভিটেশন করার দাবি করেছে, লেভিটেশন বা শূন্যে ভেসে থাকার নজির আছে, তাদের প্রায় সবাই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এখনো অনেকেই লেভিটেশন করার দাবি করে থাকে। তবে তাদের মাঝে একটা বড় আলোচনার পর্যায়ে পৌঁছেছে স্পেশাল হেড নামের এই ব্যক্তি। আর আজকের ছেলে বুড়োদের অনেকেই আবার এই ব্যাক্তিটিকে দেখে কুসংষ্কারাচ্ছন্ন হচ্ছেন।

৪.০ স্পেশাল হেড:
স্পেশাল হেড একটি ছদ্ম নাম। এই নামটি ব্যবহার করে লেভিটেশনে আলোচিত ব্যক্তিটির আসল নাম ড্যানি ওলভার্টন (Danny Worverton)ওনার ফেসবুক আইডি
স্পেশাল হেড ওনার স্টেজ নেম। প্রকৃতপক্ষে সে একজন এন্টার্টেইনার বা স্টেজ পারর্ফমার। তিনি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছেন আমেরিকা গট ট্যালেন্ট এর সিজন ৮ এ লেভিটেশন স্টেজ পার্ফরমেন্স করে। আসলে ড্যানি ইন্ডিয়ার একটা ক্লাসিক কলা (এই কলা কিন্তু ব্যানানা নয় 😊) আমেরিকাতে খুব শৌল্পিকভাবে উপস্থাপন করেছেন। তার এই কলা বা লেভিটেশনটি মূলত একধরনের যাদু কৌশল। সে এমেরিকা গট ট্যালেন্ট ছাড়াও  Das Super Talent, Tengo Talento Much Talento, এবং Good Day New York শো তেও তার এই কৌশন প্রদর্শন করেছেন। স্পেশাল হেড আসলে মাল্টি ট্যালেন্টেড একটা লোক। অর্থাৎ সে শুধু লেভিটেশনের যাদু দেখিয়েই বেড়ান না। সে আরো অনেক ম্যাজিক শো করে থাকেন। পাশাপাশি সে একজন মিউজিশিয়ান ও। তার মিউজিক গুলাও তার ম্যাজিক শোতেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া সে ইলেক্ট্রনিক ড্যান্স মিউজিক এর প্রোডিউসার ও। তিনি ২০০৭ সালে আফ্রিকা গিয়েছিলেন কিছু মিউজিক রেকর্ড করার জন্য। এবং আফ্রিকার গ্রামগুলো ঘুড়ে ঘুড়ে মিউজিক রেকর্ড ও করে ফেরেন তিনি। অবশেষে সাউথ আফ্রিকান ও কেনিয়ান গানের এলবামও প্রোডিউস করেন। দুটোই ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয়। Detached And Unplugged এবং Off the Map
তার নিজের দুইটা সোলো এলবামও প্রকাশিত হয়েছে। একটা ২০১১ সালে এবং আরেকটা ২০১৪ সালে। Doing Back Flips on Top of Saguaros Naked এবং Levitation Music নামে।
Itunes aulbum
এই কারণেই তাকে মাল্টিট্যালেন্টেড বলেছিলাম। যাই হোক, এমেরিকা গট ট্যালেন্ট এ পারর্ফম করার পর তার পারর্ফমেন্সের ভিডিও রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যায়। টুইটারের অফিসিয়াল ট্রেন্ডিং স্ট্যাটিস্টিক অনুযায়ি ‘স্পেশাল হেড’ শব্দটা ঐ দিন টুইটারে সবচেয়ে বেশি টুইট হওয়া শব্দগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে ছিলো। তার ম্যাজিক পারর্ফমেন্সকে সবাই আধ্যাত্মিক বানিয়ে রেখেছিলো। আর ড্যনিও তার ফায়দা লুটছিলো খুব ভালো ভাবেই। স্পেশাল হেড কোয়াটার ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিলেন, সে সুবাদে লাস ভেগাস এবং নিউ ইউর্কে এমেরিকা গট ট্যালেন্ট এর স্টেজে পারর্ফম করেছেন। সে কোয়াটার ফাইনালে যে পারর্ফমেন্সটা প্রদর্শন করে, তা ছিলো একটি কৃত্তিম পিরামিডের চূড়ায় বসে লেভিটেশন করা।






আর তার কোয়াটার ফাইনাল এর পারর্ফমেন্সে ঘটে বিড়ম্বনা। ধোয়া এবং অন্ধকারের মাঝেই তার পা এবং মাথা দেখা যায়, যা দ্বারা স্পষ্ট তার ট্রিক সবাই ধরে ফেলে। এবার সে যথেষ্ট ভোট না পাওয়ার কারণে আর সেমিফাইনালে যেতে পারে না। এখানে শেষ হয় এমেরিকা গট ট্যালেন্টে তার লেভিটেশন যাত্রা। এটা ছিলো এমেরিকা গট ট্যালেন্ট এর ৮১০ নম্বর এপিসোড। স্পেশাল হেড এর উদ্দেশ্যে Heidi Klum বলেন, "we could all see your special head."
৫.০ যাদু ব্যাখ্যা:
শুণ্যে ভেসে থাকা বা লেভিটেশন এর ম্যাজিক প্রদর্শন এর জন্য যে বহুল আলোচিত ও জনপ্রিয় ম্যাজিক ট্রিক্স ব্যবহার করা হয়, তার নাম এরিয়েল সাসপেনশন।


  
Aerial suspension
অনেক প্রসিদ্ধ যাদুর মত এই যাদুরও উদ্ভব ভারতবর্ষে। টমাস ফ্রস্ট নামের এক ব্রিটিশ লেখককে এক ভারতীয় ব্রাহ্মণ ১৮২৮ সালে এই জাদু দেখিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। পরে মাদ্রাজেও ওই একই জাদু দেখতে পান টমাস। কোনো ক্ষেত্রেই অবশ্য তাঁকে জাদুর রহস্য বলতে রাজি হননি জাদুকররা। ইউরোপে প্রথম এই জাদু দেখান রহস্যময় জাদুকর চিং লাও। পরবর্তীকালে রবার্ট হুডিনি এ রকম একই জাদু দেখিয়ে বেশ নাম কামান। অবশ্য রবার্টের ক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রম ছিল। তিনি মাটির সমান্তরালে একটি লাঠি স্পর্শ করে শুয়ে থাকতেন। ভারতের জাদুকর পিসি সরকারও এই অ্যারিয়াল সাসপেনশন দেখিয়ে বেশ হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন। বাস্তবে এই শূন্যে ভেসে থাকার পেছনের রহস্যটি অতি মামুলি। যে বাঁশ বা লাঠিটা ধরে জাদুকর ভেসে থাকেন, সেটি সাধারণত হয় লোহা বা ইস্পাতে নির্মিত অত্যন্ত মজবুত একটি রড। এর নিচের অংশ স্টেজের সঙ্গে শক্ত করে আটকানো থাকে। আর ওপরের অংশে থাকে জাদুকরের বসার মতো প্রশস্ত একটি পাটাতন। জাদুকর স্রেফ পাটাতনের ওপর বসে লাঠিটা স্পর্শ করে থাকেন। জাদুকরের পরনে থাকা লম্বা আলখাল্লা বা পোশাক পাটাতনটিকে পুরোপুরি ঢেকে রাখে। তাই খালি চোখে মনে হয়, শূন্যে ভেসে রয়েছেন।
তবে শূন্যে ভাসার এই জাদুর সঙ্গে লেভিটেশনকে গুলিয়ে ফেললে ভুল হবে। লেভিটেশন জাদুর ক্ষেত্রে জাদুকর কোনো লাঠি বা অনুরূপ বস্তু ছাড়াই মাটির কয়েক ইঞ্চি ওপরে উঠে ভাসতে পারেন, তবে সীমিত সময়ের জন্য। আদতে এই লেভিটেশন পায়ের কারসাজি ছাড়া কিছুই নয়। দর্শকের দৃষ্টির সঙ্গে একটি বিশেষ কোণ সৃষ্টি করে জাদুকররা এমনভাবে দাঁড়ান, যাতে মনে হয় তিনি শূন্যে দাঁড়িয়ে আছেন।
আমাদের বাংলাদেশেও স্পেশাল হেড এর মত দু একজন লেভিটেশনবাজ আছে।
ময়মনসিংহের যাদু শিবলি নামক একজন ফেসবুকে তার লেভিটেশন এর ছবি আপলোড করে ব্যাপক সারা ফেলে দিয়েছিলেন। সে লেভিটেশন করতো বিলের ওপর, তবে সে তার ট্রিক এ ব্যবহার করতো বাঁশ। যা তার ফেসবুকের আপলোডকৃত ছবিগুলোতে খুব কারসাজির সাথে ফটোশপ করা হয়েছে।



খোলা বিলের তুলনায় কোনো বদ্ধ ঘরে এই ম্যাজিকটা দেখালে সেটা বেশি এফেক্টিভ হবে ।পীর ফকির সাধু সন্যাসীরা এই কাজ বেশি করেন । তারা কোনো একটা দেয়ালের কাছাকাছি বসেন ।দেয়ালে কয়েক ফুট উচুতে একটা কাঠ/স্টিলের সিট কিংবা রড বসানো থাকে ।পীর সাহেব সেই সিটের উপরে বসে থাকেন ।



সাধারনত রুমের আলো কম থাকে ।ব্যাকগ্রাউন্ড দেওয়ালের সাথে সিটের রঙ একই রকম থাকে, এমনকি পীরের গায়ের কাপড়ের রঙ ও একই রকম হয়ে থাকে। এর ফলে পিছনের সিট কিংবা রড চোখে পড়েনা । ভক্তরা মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেখেন যে কিভাবে পীর সাহেব শূন্যে ভেসে আছেন
ফেসবুকে শাকিল নামের এক ছেলে এইভাবে নিজের ছবি আপলোড করেছেন । অবশ্য ছবিটা দেখে মনে হচ্ছে এটা জাস্ট ফটোশপ ও হতে পারে ।




আর ফেমাস কোনো যাদুকরদের  আমরা যখন দেখি কোনো সুন্দরী মেয়েকে একটা স্ট্রেচার এ শুইয়ে তাকে ধীরে ধীরে শুণ্যে ভেসে তুলছেন যাদুকর, তখন আসলেই অবাক হতে হয়। কিন্তু এটি পিউর বিজ্ঞান। চুম্বকের বিকর্ষণ শক্তি ব্যবহার করে এটি করা হয়। যাকে আমরা ম্যাগনেটিক লেভিটেশন বলে উপরে জেনেছি।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট

কপিরাইট ক্রেডিট: কালের কণ্ঠ এবং রহস্যের সন্ধানে ফেসবুক পেজ

দেবী থেমিস (Θεμις) ও গ্রিকদের অবদান (সংক্ষিপ্ত)

গ্রিক দেব-দেবতারা সাধারণত আমাদের বর্তমান সমাজ, নিতী, বিজ্ঞান, ইতিহাস সবকিছুর কর্ণধার। থেমিস ছিলো অরানস (OURANOS) এবং গাইয়া (GAIA) 'র কন্যা।(Hesiod Theogony 132, Orphic Hymn 79, Euripides Eumenides 1, Apollodorus 1.13, Diodorus Siculus 5.66.1)
থেমিস ছিলো জিউস এর স্ত্রী। সে ছিলো আইন-শৃঙ্খলার দেবী। তৎকালীন আইনে সেই প্রথম মানবজাতির পক্ষে মানবতাকে সামগ্রিক আইন এবং ন্যায় হিসেবে উপস্থাপন করে। যেমন, ভক্তি এবং সম্মান, অতিথেয়তা, সুশাসন, আচরণের সমাবেশ ইত্যাদি। এখন আমরা তাঁর যে ভাষ্কর্য দেখি, তা সাধারণত এরকম:
চোখ কালো কাপড় দিয়ে বাধা, এক হাতে দাড়িপাল্লা- অপর হাতে তরোয়াল এবং পায়ের নিচে একটি বই, 'MENS LEGIS'
তার হাতে কালো কাপড় বোঝায় বিচারকালে সে অন্ধ (তার পরিবার-আত্মীয়ের প্রতি), হাতের দাড়িপাল্লার দুটি পাল্লা হলো তার নিকট সবাই সমান, এবং অন্য হাতের তরোয়াল হলো অপরাধীর জন্য কঠোর শাস্তির প্রতীক। অনেকটা আমাদের চিরচেনা আইন এর কথাগুলোর কথাই মনে পরে যাচ্ছে, তাই না? অর্থাৎ, আইনের চোখে সবাই সমান, কোনো অপরাধী আইনের শিকল থেকে মুক্তি পাবে না, কারণ আইনের হাত অনেক লম্বা। হ্যাঁ, আইন সম্পর্কিত এই সকল বিষয়গুলোই আমরা পেয়েছি গ্রিক দেবী থেমিস এর কাছ থেকে। তিনিই ছিলেন আইন(The Goddess of divine law and order)। আমাদের সুপ্রিম কোর্টের সামনে যে ভাষ্কর্যটি সুউচ্চ সম্মানে দাঁড়িয়ে আছে, সেটি এই দেবী থেমিস এর ভাষ্কর্য। আদিম গ্রিক বস্ত্র আমাদের ভারতীয় সংষ্কৃতির.(ভূলে যাবেন না, বাংলাদেশ ভারতবর্ষের একটি অঙ্গ) সঙ্গে মানায় না, তাই দেবীকে পরিয়ে দেয়া হয়েছে শাড়ি, দেওয়া হয়েছে বাঙ্গালীপনার ছোয়া।

একটি লাঠি, যার মাথায় রয়েছে দুটি পাখা এবং লাঠিটিকে পেঁচিয়ে ধরে আছে দুটি সাপ। আপনারা অনেক চিকিৎসালয় অথবা চিকিৎসা বিজ্ঞানের অনেক যায়গাতেই এই লাঠির প্রতিকটি দেখে থাকবেন। আপনারা কেউ বলতে পারবেন এই লাঠিটি কার?
এই লাঠিটি গ্রিক দেবতা এক্সলি পিয়াস (exile pious) এর। যে ছিলো গ্রিক চিকিৎসা দেবতা। বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, কারও শরীরে যদি নারী ও পুরুষের যৌনাঙ্গ একই সঙ্গে থাকে, তাকে হার্মোফ্রোডাইট বলা হয়, গ্রীক দেবতা হারমেস আর দেবী আফ্রোডাইটির নাম মিলিয়ে হার্মোফ্রোডাইট শব্দটি তৈরি করা হয়েছিল। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এরকম অনেক শব্দ আছে , যেসব শব্দের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে গ্রীক পুরাণের।

এইসব দেব-দেবী তো শুধু কল্পকাহিনী। চলুন, বাস্তবতা থেকে একটু ঘুরে আসা যাক। চলুন আমাদের জ্ঞান আর তথ্যকোষ থেকে কিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি।
এই পৃথিবীর প্রথম ইতিহাসবিদ কে?
>হেরোডোটাস
প্রথম গণিতজ্ঞ?
>থেলিস, পিথাগোরাস
প্রথম দার্শনিক?
>সক্রেটিস, প্লেটো, এরিস্টটল
প্রথম চিকিৎসক?
>হিপোক্রিট
সবকিছুর গোড়া ঐ গ্রিসেই। এছাড়াও গ্রিক পুরাণ আমাদের দিয়েছে কিছু শিক্ষণীয় গল্প, জ্ঞান আর চেতনা। মিথলজি সম্পর্কে হালকা আগ্রহ থাকায় গ্রিক দেব-দেবীদের সম্পর্কে জানার পরিসর হয়েছে। আরও কিছু আছে যা গ্রিকদেরই অবদান। যেমন, জুরির শুনানি, প্রথম থিয়েটার, অলিম্পিক গেইম, মেকানিক্যাল অডোমিটার, স্থাপত্যশিল্প এবং আরও অনেক কিছু।

A Brief History of Time

স্যার স্টিফেন হকিং এর লেখা বিখ্যাত বই A Brief History of Time. বইটি পড়ার অদম্য ইচ্ছা নিয়েও অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেক দিন। এখন আপনাদের সামনে উপস্থিত করছি এই বিখ্যাত বইটির বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন। আশা করি প্রত্যেক বিজ্ঞান প্রেমিদের ভালো লাগবে।


A Brief History of Time (Bangla)

A Brief History of Time (English)

এলিয়েনের খোঁজে মানুষ

১। অপারকাও প্রাটো, ব্রাজিল

অপারেশন প্লেট , শতাব্দীর সেরা ইউএফও তদন্তের মধ্যে একটি। ১৯৭৭ সাল। এই মিশনে ক্যাপ্টেন হলান্দা’র মিলিটারি ট্রুপের মাথার উপর দিয়ে হলুদ, সবুজ আলোক বিচ্ছুরিত করে একটি ইউএফও উড়ে যায়।  পরবর্তীতে বিশেষজ্ঞ আর ফটোগ্রাফাররা ৩০০ এরও বেশি প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলে নদী তীরবর্তী এলাকা ও গভীর পানিতে ভ্রাম্যমান আলো বিচ্ছুরণকারী চাকতি নিয়ে অনেক তথ্য জানতে পারেন। আরো জানা যায় যে, তাদের বিচ্ছুরিত সবুজ ও লাল আলো ত্বকে পড়ায় কিছু মানুষ প্যাঁরালাইজড ও ২ জন মানুষের মৃত্যু ঘটে , হলান্দার মতে, ইউএফও গুলো ব্লাড স্যাম্পল নিতেই এসেছিল।  উপরমহল থেকে নিষেধ থাকা সত্তেও ক্যাপটেন একটি পত্রিকাতে সাক্ষাৎকার দেন, এবং ২ মাস পর তাকেসহ অনেক প্রত্যক্ষদর্শীকেও আত্মহত্যা করেন!  অনেক ফাইল আর খুঁজে পাওয়া যায়নি!

২। রাফ তদন্ত, অস্ট্রেলিয়া

১৯৩০ সাল।  এক অস্ট্রেলিয়ান এয়ার ফোরস অফিসার জর্জ জোনসকে ভিক্টোরিয়াতে পাঠানো হয় ইউএফও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিষয়ে তদন্ত করতে। এদিকে অগাস্ট ২৩, ১৯৫৩ তে সিভিল এভিয়েশনের ডেপুটি ডিরেক্টর টম, পাপুয়া নিউগিনিতে একটি সিলভার রঙের বুলেট আকৃতির ইউএফওর ছবি তুলেন।  ১৯৮৩ তে রাডারে কয়েকটি ইউএফও ধরা পরার পর কোনো এক অজানা কারণে তদন্তের সমাপ্তি টানা হয় । শোনা যায় যে, অনেক তথ্য লোপাট কিংবা নষ্ট করে দেয়া হয়!

৩। ক্রিদোভনি, উরুগুয়ে

১৯৭৯ সালে উরুগুয়ে এয়ার ফোরসের তদন্তে বের হয় যে, ২% কেইসে গৃহপালিত পশু ,মানুষের উধাও হওয়া আর মাটিতে অদ্ভুত চাকার দাগ আর অবতরণস্থানের মাটির রাসায়নিক ফর্মুলার ভিন্নতায় ইউএফওর সংশ্লিষ্টতা থাকলেও থাকতে পারে । তবে অনেক তদন্তের পর ,ক্রিদোভনি সংস্থার পরিচালক সানচেজ জানান, উড়ন্ত যানের উৎসের ব্যাপারটা স্পষ্ট নয়,উপযুক্ত গবেষণা ব্যাতিত কোনো বিশেষ মতবাদের পক্ষে কথা বলা সমীচীন নয় ।

৪। জিপান, সেপ্রা ও জেইপান, ফ্রান্স

২য় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৬০ সালে, ফ্রেঞ্চ সায়েনটিফিক রিসার্চ মিনিস্টার এলেইন পেরিফিটটি আমেরিকা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একটি ইউএফও তদন্ত কমিটি গঠনের আদেশ দেন।  পরবর্তীতে ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে একজন মনোবিজ্ঞানীসহ ৪ জনের একটি দল প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে। এদিকে ১৯৮২ সালের জিপান রিপোর্ট অনুযায়ী, নানসি ওয়াটার লেকেও ইউএফও দেখা যায় । সেপ্রা রিপোর্টেও ইউএফও সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায় । পরবর্তীতে ২০০৬ সালে নতুন গঠিত জেইপান এর ডিরেক্টর সিলারড দাবি করেন যে, আমেরিকা এ ব্যাপারে যথেষ্ট তদন্ত চালাচ্ছে, এবং বহির্জাগতিক প্রযুক্তি দিয়ে নিজেদের সভ্যতাকে সমৃদ্ধশালী করার উদ্দেশ্যে সারা বিশ্বের কাছে ভুল তথ্য দিচ্ছে, তথ্য লুকাচ্ছে !

৫। যুক্তরাজ্যের ফ্লাইং সসার ওয়ার্কিং পার্টি

আগস্ট, ১৯৫০ । যুক্তরাজ্যে ফ্লাইং সসার ওয়ার্কিং কমিটি গঠিত হয়, ৫ সদস্যের এ কমিটি ত্রাফাল্গার স্কয়ারের কাছে ৮ মাসের মত জরিপ করে।  জরিপে মত প্রকাশ করা হয় যে, অধিকাংশ ইউএফও সম্পর্কিত ঘটনাই আলোক বিভ্রম মাত্র । কিন্তু বাকী ঘটনাগুলো অমীমাংসিতই থেকে যার!  ২০০৯তে এই কমিটি কাজ বন্ধ করে দেয়, এই বলে যে, সামনের ৫০ বছরেও ইউএফও আক্রমণের কোনো সম্ভাবনাই নেই ।

৬। প্রোজেক্ট ম্যাগ্নেট, ও প্রোজেক্ট সেকেন্ড স্টোরি, কানাডা

১৯৫০ সালে কানাডার ট্রান্সপোর্ট রেডিও ইঞ্জিনিয়ার স্মিথ, পৃথিবীর ম্যাগ্নেটিক ফিল্ড ব্যবহার করে ফ্লাইং সসারের ফ্লাইট চিহ্নিত করা ও বুঝবার উদ্দেশ্যে প্রোজেক্ট ম্যাগ্নেটের গোড়াপত্তন করেন । তবে তাতে তেমন সাফল্য আসে নি।  অন্যদিকে প্রোজেক্ট সেকেন্ড স্টোরির লক্ষ্য ছিল প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করা। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতায় এই প্রোজেক্ট বাতিল হয়।

৭। চিফা, চিলি

১৯৯৭ সালে চিলির সিভিল এরোনটিক্স কর্মকর্তারা চাকালুতা এয়ারপোর্টে ২ দিন রাত্রিবেলার আকাশে অস্বাভাবিক কিছুর অস্তিত্ব খেয়াল করছিলেন।  যার পথ ধরেই চিফা মিশনের সুত্রপাত।  পরবর্তীতে ২০১৪তে চিফা, কালাহৌসি কপার মাইনের উপর ১৪০০০ ফিট উপরে ভাসমান ডিস্ক আকৃতির বস্তুর ছবি প্রকাশ করে!   পরবর্তীতে অপারেশানটির চিফ মত প্রকাশ করেন যে, এরা অমিমাংসিত এবং আপাতত তাদের দ্বারা হুমকির কোনো আশংকা নেই ।

৮। পেরুর আকাশের অদ্ভূত ঘটনা

২০০১ সালের পর রাজধানী লিমার আশেপাশে ইউএফও এত বেশী দেখা যায় যে, পেরু সরকার তদন্তে নামতে বাধ্য হয়।  জনশ্রুতি আছে যে, ১৯৯১ তে প্রেসিডেন্ট ফুজিমোরি ,একদল মিলিটারি অফিসারসহ আমাজনে মাথার ১০০০ ফিট উপরে উড়ন্ত ধাতব কিছুর দেখা পান, যা তিনি কোন কারণে ধামাচাপা দেন!  এর অনেকদিন পর এয়ার কমান্ডার জুলিও সিজার কেমরু জানান যে, তিনি কৃষকদের কাছ থেকে ইউএফও সম্পর্কে অনেক কল পান।  তার কিছুদিন পর একজন পাইলট দাবি করে বসে যে,আকাশে থাকার সময় তার ঘড়িতে সময় ৩ ঘণ্টা পিছিয়ে ছিল, কিন্তু ফুয়েলের কোনো ঘাটতি হয়নি ! অবশেষে বৈজ্ঞানিকদের দ্বারা তথ্য যাচাই বাছাইয়ের পর সরকার জানায় যে, ব্যাপারটা কাল্পনিক নাকি বাস্তব, সেটা বোধগম্য নয় ।

৯। সেটকো মো এবং সেটকো এএস, সোভিয়েট ইউনিয়ন

সেপ্টেম্বর ২০, ১৯৭৭। পেত্রোজাভোডেসক গ্রামের অধিবাসীরা মাথার উপর দিয়ে লালবর্ণের বস্তুকে উড়ে যেতে দেখল। এরপর বিভিন্ন সময়ে ইউ এফ ও দেখা যাওয়ায় ১৯৭৮ থেকে ১৯৯০ এর মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন গোপন তদন্ত কর্মসূচী পরিচালনা করে । বিভিন্ন রিপোর্ট আর তথ্য যাচাই বাছাই এর পর সেনাবাহিনী ও বৈজ্ঞানিকরা মত প্রকাশ করেন যে, এগুলো হয়ত অজানা মহাজাগতিক যান কিংবা আমেরিকা, জাপানের মিলিটারি ইকুইপমেণ্ট !

১০। প্রোজেক্ট সাইন, গ্রাজ এন্ড ব্লু বুক, যুক্তরাষ্ট্র

১৯৪৭ সালের জুনের ২৪ তারিখ।   কেণেট আর্নল্ড ওয়াশিঙটনের মাঊণ্ট রেইনাতে ১২০০ নট উচ্চতায় একটি উড়ন্ত যান দেখতে পা। তখন একটি গুজব ছিল যে, এগুলো আমেরিকার এয়ারক্র্যাফট টেস্ট । ১৯৪৭ এ প্রোজেক্ট সাইন এ গুজব ভিত্তিহীন দাবী করে।  কিন্তু ইউএফওর অস্তিত্ব যে আছে, তা অনেকটাই প্রমাণিত হয়। জনগণের উৎকন্ঠা বেড়ে যাওয়ায়, উপরের আদেশে ডকুমেন্টসগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয় । ১৯৬৯ সালে এয়ারফোরসের ১২৬১৮টি ইউএফও ফাইলস নিয়ে দীর্ঘ তদন্তের পর কলোরাডো ভার্সিটি দাবি করে যে, ইউএফও কিংবা বহিরজাগতিক প্রযুক্তি বলতে কিছু নেই, এবং বিপদের কোনো আশংকাও নেই । তবে এ বিষয়ে সিআইএ, ডিআইএ কিংবা নাসার নিজস্ব তদন্তের ফলাফল প্রকাশ না করাটা প্রশ্নবোধক চিহ্নের জন্ম দেয়!