স্যার স্টিফেন হকিং এর লেখা বিখ্যাত বই A Brief History of Time. বইটি পড়ার অদম্য ইচ্ছা নিয়েও অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেক দিন। এখন আপনাদের সামনে উপস্থিত করছি এই বিখ্যাত বইটির বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন। আশা করি প্রত্যেক বিজ্ঞান প্রেমিদের ভালো লাগবে।
১। অপারকাও প্রাটো, ব্রাজিল
অপারেশন প্লেট , শতাব্দীর সেরা ইউএফও তদন্তের মধ্যে একটি। ১৯৭৭ সাল। এই মিশনে ক্যাপ্টেন হলান্দা’র মিলিটারি ট্রুপের মাথার উপর দিয়ে হলুদ, সবুজ আলোক বিচ্ছুরিত করে একটি ইউএফও উড়ে যায়। পরবর্তীতে বিশেষজ্ঞ আর ফটোগ্রাফাররা ৩০০ এরও বেশি প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলে নদী তীরবর্তী এলাকা ও গভীর পানিতে ভ্রাম্যমান আলো বিচ্ছুরণকারী চাকতি নিয়ে অনেক তথ্য জানতে পারেন। আরো জানা যায় যে, তাদের বিচ্ছুরিত সবুজ ও লাল আলো ত্বকে পড়ায় কিছু মানুষ প্যাঁরালাইজড ও ২ জন মানুষের মৃত্যু ঘটে , হলান্দার মতে, ইউএফও গুলো ব্লাড স্যাম্পল নিতেই এসেছিল। উপরমহল থেকে নিষেধ থাকা সত্তেও ক্যাপটেন একটি পত্রিকাতে সাক্ষাৎকার দেন, এবং ২ মাস পর তাকেসহ অনেক প্রত্যক্ষদর্শীকেও আত্মহত্যা করেন! অনেক ফাইল আর খুঁজে পাওয়া যায়নি!
২। রাফ তদন্ত, অস্ট্রেলিয়া
১৯৩০ সাল। এক অস্ট্রেলিয়ান এয়ার ফোরস অফিসার জর্জ জোনসকে ভিক্টোরিয়াতে পাঠানো হয় ইউএফও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিষয়ে তদন্ত করতে। এদিকে অগাস্ট ২৩, ১৯৫৩ তে সিভিল এভিয়েশনের ডেপুটি ডিরেক্টর টম, পাপুয়া নিউগিনিতে একটি সিলভার রঙের বুলেট আকৃতির ইউএফওর ছবি তুলেন। ১৯৮৩ তে রাডারে কয়েকটি ইউএফও ধরা পরার পর কোনো এক অজানা কারণে তদন্তের সমাপ্তি টানা হয় । শোনা যায় যে, অনেক তথ্য লোপাট কিংবা নষ্ট করে দেয়া হয়!
৩। ক্রিদোভনি, উরুগুয়ে
১৯৭৯ সালে উরুগুয়ে এয়ার ফোরসের তদন্তে বের হয় যে, ২% কেইসে গৃহপালিত পশু ,মানুষের উধাও হওয়া আর মাটিতে অদ্ভুত চাকার দাগ আর অবতরণস্থানের মাটির রাসায়নিক ফর্মুলার ভিন্নতায় ইউএফওর সংশ্লিষ্টতা থাকলেও থাকতে পারে । তবে অনেক তদন্তের পর ,ক্রিদোভনি সংস্থার পরিচালক সানচেজ জানান, উড়ন্ত যানের উৎসের ব্যাপারটা স্পষ্ট নয়,উপযুক্ত গবেষণা ব্যাতিত কোনো বিশেষ মতবাদের পক্ষে কথা বলা সমীচীন নয় ।
৪। জিপান, সেপ্রা ও জেইপান, ফ্রান্স
২য় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৬০ সালে, ফ্রেঞ্চ সায়েনটিফিক রিসার্চ মিনিস্টার এলেইন পেরিফিটটি আমেরিকা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একটি ইউএফও তদন্ত কমিটি গঠনের আদেশ দেন। পরবর্তীতে ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে একজন মনোবিজ্ঞানীসহ ৪ জনের একটি দল প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে। এদিকে ১৯৮২ সালের জিপান রিপোর্ট অনুযায়ী, নানসি ওয়াটার লেকেও ইউএফও দেখা যায় । সেপ্রা রিপোর্টেও ইউএফও সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায় । পরবর্তীতে ২০০৬ সালে নতুন গঠিত জেইপান এর ডিরেক্টর সিলারড দাবি করেন যে, আমেরিকা এ ব্যাপারে যথেষ্ট তদন্ত চালাচ্ছে, এবং বহির্জাগতিক প্রযুক্তি দিয়ে নিজেদের সভ্যতাকে সমৃদ্ধশালী করার উদ্দেশ্যে সারা বিশ্বের কাছে ভুল তথ্য দিচ্ছে, তথ্য লুকাচ্ছে !
৫। যুক্তরাজ্যের ফ্লাইং সসার ওয়ার্কিং পার্টি
আগস্ট, ১৯৫০ । যুক্তরাজ্যে ফ্লাইং সসার ওয়ার্কিং কমিটি গঠিত হয়, ৫ সদস্যের এ কমিটি ত্রাফাল্গার স্কয়ারের কাছে ৮ মাসের মত জরিপ করে। জরিপে মত প্রকাশ করা হয় যে, অধিকাংশ ইউএফও সম্পর্কিত ঘটনাই আলোক বিভ্রম মাত্র । কিন্তু বাকী ঘটনাগুলো অমীমাংসিতই থেকে যার! ২০০৯তে এই কমিটি কাজ বন্ধ করে দেয়, এই বলে যে, সামনের ৫০ বছরেও ইউএফও আক্রমণের কোনো সম্ভাবনাই নেই ।
৬। প্রোজেক্ট ম্যাগ্নেট, ও প্রোজেক্ট সেকেন্ড স্টোরি, কানাডা
১৯৫০ সালে কানাডার ট্রান্সপোর্ট রেডিও ইঞ্জিনিয়ার স্মিথ, পৃথিবীর ম্যাগ্নেটিক ফিল্ড ব্যবহার করে ফ্লাইং সসারের ফ্লাইট চিহ্নিত করা ও বুঝবার উদ্দেশ্যে প্রোজেক্ট ম্যাগ্নেটের গোড়াপত্তন করেন । তবে তাতে তেমন সাফল্য আসে নি। অন্যদিকে প্রোজেক্ট সেকেন্ড স্টোরির লক্ষ্য ছিল প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করা। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতায় এই প্রোজেক্ট বাতিল হয়।
৭। চিফা, চিলি
১৯৯৭ সালে চিলির সিভিল এরোনটিক্স কর্মকর্তারা চাকালুতা এয়ারপোর্টে ২ দিন রাত্রিবেলার আকাশে অস্বাভাবিক কিছুর অস্তিত্ব খেয়াল করছিলেন। যার পথ ধরেই চিফা মিশনের সুত্রপাত। পরবর্তীতে ২০১৪তে চিফা, কালাহৌসি কপার মাইনের উপর ১৪০০০ ফিট উপরে ভাসমান ডিস্ক আকৃতির বস্তুর ছবি প্রকাশ করে! পরবর্তীতে অপারেশানটির চিফ মত প্রকাশ করেন যে, এরা অমিমাংসিত এবং আপাতত তাদের দ্বারা হুমকির কোনো আশংকা নেই ।
৮। পেরুর আকাশের অদ্ভূত ঘটনা
২০০১ সালের পর রাজধানী লিমার আশেপাশে ইউএফও এত বেশী দেখা যায় যে, পেরু সরকার তদন্তে নামতে বাধ্য হয়। জনশ্রুতি আছে যে, ১৯৯১ তে প্রেসিডেন্ট ফুজিমোরি ,একদল মিলিটারি অফিসারসহ আমাজনে মাথার ১০০০ ফিট উপরে উড়ন্ত ধাতব কিছুর দেখা পান, যা তিনি কোন কারণে ধামাচাপা দেন! এর অনেকদিন পর এয়ার কমান্ডার জুলিও সিজার কেমরু জানান যে, তিনি কৃষকদের কাছ থেকে ইউএফও সম্পর্কে অনেক কল পান। তার কিছুদিন পর একজন পাইলট দাবি করে বসে যে,আকাশে থাকার সময় তার ঘড়িতে সময় ৩ ঘণ্টা পিছিয়ে ছিল, কিন্তু ফুয়েলের কোনো ঘাটতি হয়নি ! অবশেষে বৈজ্ঞানিকদের দ্বারা তথ্য যাচাই বাছাইয়ের পর সরকার জানায় যে, ব্যাপারটা কাল্পনিক নাকি বাস্তব, সেটা বোধগম্য নয় ।
৯। সেটকো মো এবং সেটকো এএস, সোভিয়েট ইউনিয়ন
সেপ্টেম্বর ২০, ১৯৭৭। পেত্রোজাভোডেসক গ্রামের অধিবাসীরা মাথার উপর দিয়ে লালবর্ণের বস্তুকে উড়ে যেতে দেখল। এরপর বিভিন্ন সময়ে ইউ এফ ও দেখা যাওয়ায় ১৯৭৮ থেকে ১৯৯০ এর মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন গোপন তদন্ত কর্মসূচী পরিচালনা করে । বিভিন্ন রিপোর্ট আর তথ্য যাচাই বাছাই এর পর সেনাবাহিনী ও বৈজ্ঞানিকরা মত প্রকাশ করেন যে, এগুলো হয়ত অজানা মহাজাগতিক যান কিংবা আমেরিকা, জাপানের মিলিটারি ইকুইপমেণ্ট !
১০। প্রোজেক্ট সাইন, গ্রাজ এন্ড ব্লু বুক, যুক্তরাষ্ট্র
১৯৪৭ সালের জুনের ২৪ তারিখ। কেণেট আর্নল্ড ওয়াশিঙটনের মাঊণ্ট রেইনাতে ১২০০ নট উচ্চতায় একটি উড়ন্ত যান দেখতে পা। তখন একটি গুজব ছিল যে, এগুলো আমেরিকার এয়ারক্র্যাফট টেস্ট । ১৯৪৭ এ প্রোজেক্ট সাইন এ গুজব ভিত্তিহীন দাবী করে। কিন্তু ইউএফওর অস্তিত্ব যে আছে, তা অনেকটাই প্রমাণিত হয়। জনগণের উৎকন্ঠা বেড়ে যাওয়ায়, উপরের আদেশে ডকুমেন্টসগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয় । ১৯৬৯ সালে এয়ারফোরসের ১২৬১৮টি ইউএফও ফাইলস নিয়ে দীর্ঘ তদন্তের পর কলোরাডো ভার্সিটি দাবি করে যে, ইউএফও কিংবা বহিরজাগতিক প্রযুক্তি বলতে কিছু নেই, এবং বিপদের কোনো আশংকাও নেই । তবে এ বিষয়ে সিআইএ, ডিআইএ কিংবা নাসার নিজস্ব তদন্তের ফলাফল প্রকাশ না করাটা প্রশ্নবোধক চিহ্নের জন্ম দেয়!